ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি বাড়ছে, কিন্তু জানেন তো এর ভাল-মন্দ!
ডাক্তারি পরিভাষায় যার নাম ‘হাইমেন রিকনস্ট্রাকশন সার্জারি’। দ্বিতীয়টি হল ‘ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি’। অর্থাত্ ভ্যাজাইনার প্লাস্টিক সার্জারি। শুনেই চমকে উঠলেন? ভ্যাজাইনারও প্লাস্টিক সার্জারি! হ্যাঁ এটাই হচ্ছে বটে। তবে প্লাস্টিক সার্জারির চিরাচরিত ধারণা থেকে এই অপারেশন একেবারে আলাদা।
যেমন ধরুন, জন্মগত বোঁচা নাক পছন্দ ছিল না বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টির। তাই প্লাস্টিক সার্জারির সাহায্য নিয়ে তা চোখা করে ফেলেছেন। আবার নিজের আবাল্যের ঠোঁট না-পসন্দ ছিল অনুষ্কা শর্মার। প্লাস্টিক সার্জারি করার পর এখন পছন্দের ‘পাউট’ দেন নায়িকা। এ হেন উদাহরণ অজস্র। অর্থাত্ সৌন্দর্যায়নের উদ্দেশ্যে প্লাস্টিক সার্জারি। কখনও বা সার্জারির সাহায্য নিয়ে ঢেকে ফেলা যায় গভীর কোনও ক্ষতও। কিন্তু ‘ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি’ শব্দের মধ্যে ‘প্লাস্টি’ শব্দটা কোথাও যেন ভ্রম তৈরি করে অনেকের মনেই। অনেকেই ভাবেন, হয়তো পছন্দমতো যোনির গঠন বদলে নেওয়া যায় এই অপারেশনে। বিষয়টা আদৌ তা নয়। ভ্যাজাইনোপ্লাস্টির কারণ যে সম্পূর্ণ ভিন্ন তা খোলসা করলেন এ শহরের চিকিত্সকেরাই।‘ব্লাইন্ড ভ্যাজাইনা’!
উইকি বলছে, ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি হল ভ্যাজাইনাল ক্যানালের প্লাস্টিক সার্জারি। ওই অঙ্গের মাসল এবং টিস্যু শক্তিশালী করতে নাকি এই সার্জারি করা হয়। এটাকে ভ্যাজাইনাল রিজুভিনেশনও বলে। সত্যিই কি তাই? চিকিত্সক শিউলি মুখোপাধ্যায় জানালেন, মহিলাদের ‘এমআরকেএইচ সিনড্রোম’ থাকলে এই অপারেশনের পরামর্শ দেওয়া হয়। অর্থাত্, জন্ম থেকেই হয়তো মেয়েটির যোনি নেই। কোনওদিন মেনস্ট্রুয়েশন হয়নি। অথবা কারও ভ্যাজাইনা রয়েছে। কিন্তু তা ছোট। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে ‘ব্লাইন্ড ভ্যাজাইনা’। যা ইন্টারকোর্স করার জন্য উপযুক্ত নয়। চিকিত্সক সুসুপ্তা চৌধুরী বললেন, ‘‘টেস্টিকুলার ফেমিনাইজেশন সিনড্রোম থাকলে অনেক সময় এই অপারেশনের প্রয়োজন হয়। তবে এর সঙ্গে যোনি আলাদা করে সুন্দর করার কোনও গল্প নেই।’
ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি সম্বন্ধে কতটা সচেতন সমাজ?
সাইকোলজিস্ট সুদীপা বসুর ব্যখ্যা, শরীর সম্পর্কে সকলেই এখন খুব সচেতন। ১০ বছর আগেও সেক্স রিলেটেড বিজ্ঞাপন বা আলোচনা এত স্বচ্ছন্দ ছিল না। সে জন্য এখন এই ধরনের অপারেশন বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। তিনি বললেন, ‘‘দেখুন, যৌবনকে হারাতে দেব না এই ইচ্ছেটা কমবেশি সকলের মধ্যেই কাজ করে। ২৫ বছরের বিবাহবার্ষিকীতে স্বামীর কাছে নিজেকে নতুন করে মেলে ধরার জন্য কোনও এক স্ত্রী এই ধরনের অপারেশনের সাহায্য নিয়েছেন এ খবর আমি বেশ কয়েক বছর আগে সংবাদপত্রেই পড়েছি। আবার আমি এমন ইয়ং পেশেন্ট পেয়েছি যারা ইন্টারকোর্স নিয়ে সমস্যার কথা বলেছেন, যদিও অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলো বেশির ভাগটাই মানসিক। তবে সার্জারি করাতে হবে এমন চিন্তাধারা অনেকের ক্ষেত্রে নেইও। মানে অনেকেই বিষয়টা জানেন না। দু’রকম উদাহরণই আছে কিন্তু।’’ অনুত্তমা বললেন, ‘‘সেক্সুয়াল ডিফিকাল্টি নিয়ে অনেকেই আসেন। তবে সাইকোলজিক্যাল রিজনে তা সলভ হয়ে গেলে আর ওই পর্যন্ত যাওয়ার কথা ভাবা হয় না।’