‘ কলেজ বন্ধ থাকলেও রাস্তায় নেমে অধিকার আদায় করো মা বলেছে’
রাজধানীতে বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার পরে বুধবার নারায়ণগঞ্জ সহ সারাদেশে আন্দোলন শেষে বৃহস্পতিবার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু ২ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ শহরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী অবস্থান নেয় চাষাঢ়ায়। তারা ছিলেন স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরিহিত। সঙ্গে ছিল আইডি কার্ডও।
নারায়ণগঞ্জ সরকারী তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী আহমেদ সাইমন বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করলেও মনের ভেতরে যে তুষের আগুন সেটা তো আর নিভেনি। তাই পরিবারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই এসেছি।
আরেক শিক্ষার্থী সাবিহা সুলতানা বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী। আবার মা আমাকে বলেছে আন্দোলন করতে। তাই চলে এসেছি। মা নিজেই আমাকে ইউনিফর্ম পড়ে বের হতে বলেছে। সঙ্গে দিয়েছে এক বোতল পানি আর বিস্কুট। বলেছে দুপুরে যেন খেয়ে নেই।
এছাড়া আরো অনেক শিক্ষার্থী জানান, বুধবার টিভিতে ব্রেকিং নিউজ করেছে বৃহস্পতিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তার পরেও বৃহস্পতিবার পরিবারের লোকজনই আমাদের বলেছে রাস্তায় নেমে অধিকার আদায় করতে।
আন্দোলকারীরা আরো জানায়,এ শহরের সড়কে একটি ফুট ওভার ব্রিজ নেই। যেখানে শহরের প্রায় প্রত্যেকটি সড়ক খুবই ঝুঁকি নিয়ে জনগণকে চলাচল করতে হচ্ছে। আর প্রায় সময় অনেক মায়ের কোল খালি হচেছ। এছাড়া যথাযথ স্থানে স্প্রিড ব্রেকার নেই। আর রাজধানীতে ছাত্রদের জন্য হাফ ভাড়ার নিয়ম থাকলেও নারায়ণগঞ্জের কোন যানবাহনে হাফ ভাড়ার নিয়ম নেই। তাই অবিলম্বে হাফ ভাড়ার বিধান করতে হবে।
জানা গেছে, রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুই বাসের রেষারেষিতে শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর মঙ্গলবার প্রথম দফায় নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষার্থীরা। সেদিন শুধু চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধন করে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবী করেন। তবে সেদিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বুধবার সকাল থেকে ফের চাষাঢ়ায় অবস্থানের ঘোষণা দেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেদিন কর্মসূচী শেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারও অবস্থান কর্মসূচীর ঘোষণা আসে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা হতেই নারায়ণগঞ্জ সরকারী তোলারাম কলেজ, নারায়ণগঞ্জ কলেজ, কমার্স কলেজ, মডেল কলেজ সহ বেশ কয়েকটি কলেজ ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা দলে দলে চাষাঢ়া মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। শহরের চাষাঢ়া গোল চত্ত্বরে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, ঢাকা-পাগলা-নারায়ণগঞ্জ ও চাষাঢ়া-আদমজী-শিমরাইল সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সময়ে নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই উই ওয়ান্ট জাস্টিস সহ নানা ধরনের লেখা সম্বলিত প্লে কার্ড ছিল শিক্ষার্থীদের হাতে। পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও তারা কোন ধরনের বাধা দেয়নি।
collected from news zoom bangla